যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল টনি রাডাকিন সতর্ক করেছেন যে, বিশ্ব বর্তমানে তৃতীয় পারমাণবিক যুগের শিকার হতে যাচ্ছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাডাকিন তার বক্তৃতায় বলেন, “বিশ্বের পরিস্থিতি পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং শক্তিশালী দেশগুলোর অবস্থানেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তৃতীয় পারমাণবিক যুগ এখন আমাদের সামনে উপস্থিত।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান সময় আগের তুলনায় অনেক বেশি জটিল। স্নায়ুযুদ্ধের সময় পারমাণবিক যুগের প্রথম অধ্যায় শুরু হয়েছিল, আর দ্বিতীয় অধ্যায়ে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালানো হয়।
বিশ্ব এখন তৃতীয় পারমাণবিক যুগের সূচনায় দাঁড়িয়ে, যেখানে নানা ধরনের হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে।
রাডাকিন মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাজ্য এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়া থেকে বিপজ্জনক হুমকি অনুভব করছে। পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি এবং তার মহড়া আবারও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাশিয়া থেকে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার, বৃহত্তর পারমাণবিক মহড়া এবং নেটো দেশগুলোর বিরুদ্ধে হামলার হুমকি পাওয়া যাচ্ছে।
চীন যখন পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নে কাজ করছে, তখন সেটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে, উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন এবং অস্থির আচরণ শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে কোনো ধরনের সহযোগিতা না করে ইরানও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার চেষ্টা করছে, যা ব্যাপক উদ্বেগের কারণ।
এ সব হুমকির মধ্যে, এই বছর ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েন এবং ইরান থেকে ড্রোন সরবরাহ করে মস্কোতে হামলা চালানো ছিল একেবারে অপ্রত্যাশিত ঘটনা, এমনটাই মন্তব্য করেছেন রাডাকিন।
তবে রাডাকিন মনে করেন, রাশিয়া সরাসরি পারমাণবিক হামলা বা ন্যাটো দেশগুলোর ওপর আক্রমণ করার সম্ভাবনা এখনও খুবই কম। কারণ, তার মতে, রাশিয়া ভালো করেই জানে যে এমন একটি হামলার ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ হবে, আর সেটা যদি প্রতিক্রিয়া হিসেবে সাধারণ বা পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই আসে, তাও তার জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে।